Sitesh Dhar
About

About

 

Sitesh Dhar is a New York based performing Artist. He made his acting debut in 1983 in Bangladesh. 1988 he was selected a permanent vocal artist for Bangladesh radio, Sylhet. Since then, he has appeared in over 50 radio, television advertisement, film and theater productions. During his 36 years acting career Sitesh Dhar has worked with renown actor/Director Momtaz Uddin Ahmed, Jamaluddin Hossain, Rekha Ahmed, Rawshan ara Hussain,Shamsul Alom Bakul, Ishrat Nishat, Muzib bin Haque, Gulam Sarwar Harun, Mithun Ahmed, Zafor Rahman, Khairul Islam Pakhi, Goldie Patrick (NYU), Reena Dutt (NYU) and many more. In USA he has been working since 2000 as an actor, director, production manager, producer and organizer in the United States. His most recent performance was ‘Halal Brothers’ a play written by Alauddin Ullah and directed by Goldie Patrick, as part of Columbia University’s second year playwright’s workshop. The first three shows of Halal Brothers were staged at the Schapiro Studio theatre on New York city’s Broadway. Dhar has also performed three shows of ‘Accidental Feminist’ and directed by Reena Dutt at Columbia University’s Lenfest Center for the Arts. The most recent production, KRISHTI present ‘Pendulum’ written by Masum Reza and directed by Khairul Islam Pakhi. This production became one of the famous plays in north America in 2003. Most recently Dhar has received a Certificate of completion for “Performing Arts Essentials” from New York University’s Tisch School of the Arts. A play written by Alauddin Ullah He always finds the challenge of a live show thrilling. Sitesh would like to thank his family and his audience for their support.

সীতেষ ধর হালাল ব্রাদার্সের মুহাম্মদ

রওশন হক

সাংবাদিক


ইতিহাসের পাতা উল্টালে আমরা দেখতে পাব ২৫০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে মিশরে একটি ধর্মীয় নাটক অনুষ্ঠিত হয়। নাটকটির কাহিনী নেয়া হয়েছিল বিখ্যাত মিশরীয় মিথলজি “মিথ অফ ওসিরিস অ্যান্ড আইসিস” থেকে। আর এটাই ছিলো নাট্য-সম্পর্কিত প্রথম কোনো ঘটনা যার তথ্য নথিপত্রে পাওয়া যায়।ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় গ্রীস, ভারতবর্ষ ও রোমের নাট্য- ঐতিহ্য সবচেয়ে প্রাচীন । এদের মধ্যে গ্রীস ও ভারতবর্ষের নাট্য মঞ্চের ইতিহাস আলোচনা করলে দেখা যায় যে, প্রত্যেক ক্ষেত্রেই ধর্মের প্রয়োজনে নাটকের সৃষ্টি ।
ধর্মের প্রসংগটি আনবার মুল কারন হল বাঙালির মুসলমানদের নিউইয়র্কে ব্যবসা বাণিজ্য জড়িত হওয়ার প্রথম দিককার ঘটনা নিয়ে তৃতীয় প্রজন্মের বাঙালি আলাউদ্দীন উল্লাহ নাটক লিখেছেন “দি হালাল ব্রাদার্স ” নামের একটি নাটক । যার মুল চরিত্রে অভিনয় করে সাড়া ফেলেছেন আমাদেরই নাট্য ব্যক্তিত্ব শীতেষ ধর । আপাদমস্তক মঞ্চে কাজ করা শিল্পী তিনি । ম্যানহাটনের ওয়েসট সাইডে হাডসন নদীর তীরে দ্য থিয়েটার এ্যট শ্যপাইরো মঞ্চে তিনবার এর প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির স্কুল অফ আর্টস এর উদ্যোগে গত ১৩ই নভেম্বর তিনটি প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয় এবং সব কটি শো হলভর্তি দর্শক মুগ্ধ হয়ে উপভোগ করেন।
পাঁচ টি চরিত্রের সমন্বয়ে দ্য হালাল ব্রাদার্স , মোহাম্মদ চরিত্রে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশীর বংশোদ্ভূত নিউইয়র্ক এর নাট্যজন শীতেষ ধর।১৯৬৫ সালে ২১শে ফেব্রুয়ারি দুই বাঙালি ভাই হার্লেমে একটি হালাল মাংসের দোকান খোলেন।সে সময়েতাদেরকে অডুবল বলরুমে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে হালাল মাংস সরবরাহের জন্য কেটারার নিযুক্ত করা হয় । এই অনুষ্ঠানের বিশেষ বক্তা ছিলেন তৎকালীন সিবিল রাইটস মুভমেন্ট নেতা মেলকম এক্স । ” ইন সার্চ অব বেঙ্গলী হারলেম ” নামে নামের প্রামাণ্য চিত্র দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে দ্যা  হালাল ব্রাদার্সে আলাঊদ্দিন উল্লাহর ষাটের দশকের হারলেমের চিত্র তুলে ধরেছেন । বিশেষ করে এই এলাকার মানুষের সাংস্কিতিক ঐকতান ও সংঘর্ষ , সেই সাথে পুরানো ও নতুন ইমিগ্রান্টদের বৈপরীত্য ও দোলাচল ফুটে উঠেছে । হারলেমের এই ঘটনার মধ্য দিয়ে আমেরিকার ইমিগ্রান্টদের জীবন সংগ্রাম তুলে ধরেছেন লেখক । এটাই প্রকিতপক্ষে আমেরিকার ইতিহাস । দ্যা  ব্রাদার্স নাটকের নাটকের নির্দেশক গোল্ডি পেট্রিক এসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর পাওলা আলেকজান্দ্রা সোটো ।
মঞ্চের অভিনেতা সীতেষ ধরদীর্ঘ পঁচিশ বছর ধরে নিউইয়র্কে বসবাস করছেন। এক ছেলে ও গানের শিল্পী এই শহরের পরিচিত মুক্ত ধরকে নিয়ে তাঁর সুখের সংসার। প্রথম আলোর প্রতিনিধির সাথে সাক্ষাৎকারে বলেন, এই শহরে এসে দু’বছর নাটকের কোন কাজ করা হয়নি। ১৯৯৯ সাল থেকে মুলত নিউইয়র্ক এর সাংস্কৃতিক অঙ্গনের কাজ শুরু করেন তিনি । সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট উত্তর আমেরিকা গঠনের শুরু থেকে  কনভেনিং কমিটির সাথে যুক্ত রয়েছেন ।  নিউ ইয়র্কে প্রথম পূর্ণাঙ্গ মঞ্চে নাটক করেন  “বঙ্গ কন্যার পালা ” যার ডিরেকশন দিয়েছেন আরেক মেধাবী নির্দেশক মিথুন আহমেদ । এর পর থেকে একে একে প্রয়াত ইশরাত নিশাতের নির্দেশনায় জল বালিকা , মুজিব বিন হকের নাটক সৎ মানুষের খোঁজে , রেখা আহমেদর পুনর্জন্ম , রওশন আরা হোসেনের নাটক আমার সন্তান আমার আঁচল এবং গোলাম সারওয়ার হারুনের ঝড়ের খেয়া ও বলদ । বলা বাহুল্য বলদ নাটকটি  প্রথমবারের মতো বাংলাদেশীদের একটি সংগঠন সাউথ এশিয়ান থিয়েটার ফেস্টিভ্যালে প্রদর্শিত হয় । জামাল উদ্দিন হোসেনের নির্দেশনায় প্রথম নাটক বিবিসাব, অল মাই সান, মেরাজ ফকিরের মা, রাজা-রানী,আমি নই এসব বিখ্যাত নাটকে অভিনয় করেন শীতেষ ধর। এখানে উল্লেখ্য জামাল উদ্দিন হোসেনের নির্দেশিত নাটক বিবিসাব সাউথ ইন্ডিয়ান পিয়ারের ফেস্টিভ্যালে প্রদর্শিত হয়। প্রয়াত শ্রদ্ধেয় মমতাজউদ্দীন আহমেদ এর  পরিচালনায় বর্ণচোর সহ দুটো নাটকে মুখ্য ভূমিকায় কাজ করেন তিনি । এর মাঝে  মনোজ মিত্রের লেখা নাটক পাখি প্রদর্শিত হয় মিশিগান বঙ্গ সম্মেলনে উল্লেখ্য এটিও নিউ ইয়র্কের নাট্যকর্মীদের প্রথম একটি নাটক যার  উদ্যোক্তা ছিলেন প্রবীণ নাট্যব্যক্তিত্ব ঝর্ণা চৌধুরী। নাটক হাসন রাজা রচয়িতা মোস্তাক আহমেদ নাটক “ক্ষ্যাপা পাগলার প্যাচাল ” পরিচালনা করেছেন শামসুল আলম বকুল এই নাটকটিতে তিনি নিজেও অভিনয় করেন । তার থেকে বিশেষ অংশ নিয়ে 2020 সালে প্যানডেমিক  সময়ে ছোট আকারে একটা ওয়েব পারফরম্যান্সও তৈরী করেছেন তিনি । যা নেট দুনিয়ায় প্রশংসিত হয়েছে। শিল্পী শীতেষ ধরের সর্বশেষ সাড়া জাগানো নাটক নিউ ইয়র্কে” হালাল ব্রাদার্স ” লিখেছেন আলাউদ্দিন উল্লাহ ডিরেক্টের গোল্ডি প্যাট্রিক ।
সীতেষ ধরের জন্ম বাংলাদেশের মৌলভীবাজার উপজেলার কালার গাঁও গ্রামে। শিশুকালেই গ্রাম ছেড়ে মৌলভীবাজার শহরে চলে আসেন ভর্তি হন কাশিনাথ আলাউদ্দিন উচ্চবিদ্যালয় সেখান থেকে এসএসসি পাশ করার পর মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ থেকে  ব্যচ্যলার করেন । বাংলাদেশ থেকে ব্যাচেলর করে নিউ ইয়র্কে Touro college থেকে psychology and education নিয়ে আবারো চারবছরের  ব্যাচেলার করেন । তিনি দীর্ঘদিন ধরে নিউইয়র্ক ষ্টেট সার্টিফাইড ইন্স ট্র্যাক্টর হন এবং নিজে একটি ড্রাইভিং স্কুল শুরু করেন । ২০০৫ সাল থেকে ম্যানহাটনের P226 এম এ প্যারা প্রফে শোনাল (Para professional ) হিসেবে কাজ শুরু করেন । বর্তমানে একই স্কুলে ক্লাস রুম ম্যানেজার (pcm) হিসেবে কর্মরত আছেন । বর্তমানে নিউ ইয়র্কের ব্রুকলীনে আর আর ড্রাইভিং স্কুলের pre licensing course এর ইন্সট্রাক্টর হিসেবেও কাজ করছেন ।
অকপটে বলেন নাটক এর উপরে আমার প্রাকটিকেল অভিনয় ছাড়া একাডেমিক পড়াশোনা একেবারেই সীমিত। তবে নাটকের উপরে বই পড়ার অভ্যাস আছে আর  দেশে এবং নিউ ইয়র্কে মিলে গুটিকয়েক ওয়ার্কশপ করেছেন । নিউ ইয়র্কে মেইনস্ট্রিমে দু’তিনটে ওয়ার্কশপ করেছেন । তিনি প্রথম মঞ্চে নাটক করেন  ক্লাস সেভেনে পড়াকালীন । কালীচরণ দাস এবং পরিমল শ্রুতি দেব এর হাতেই প্রথম নাটকের হাতেখড়ি হয়। তারপর থেকে দীর্ঘদিন  মৌলভীবাজারে মঞ্চ নাটকের সাথে যুক্ত ছিলেন ।  নাটক এবং সাংস্কৃতিক অঙ্গনের পাশাপাশি রাজনীতিতে ছাত্র ইউনিয়নের সাথে সক্রিয় ছিলেন ।   মৌলভীবাজার জেলার ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংগঠন কৃষ্টি মৌলভীবাজারের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন । শীতেষ ধর ১৯৮৭ -৮৮  সালের দিকে  বাংলাদেশ বেতার সিলেটের নিয়মিত নাট্যশিল্পী হিসেবে নির্বাচিত হন  এবং দীর্ঘদিন কাজ করেন । মৌলভীবাজার থাকাকালীন সময়ে তিনি বেশ কিছু ভিডিও ফিল্মে অভিনয় করেন পাশাপাশি ফিল্ম তৈরিতে সহকারী পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
টেলিভিশননে অভিনয়ের কথা জানতে চাইলে বলেন , টিভি নাটকে অভিনয় করে দ্রুত ফেমাস হওয়ার ইচ্ছেটা কখনোই ছিল না ।তবে শখ ছিল তাই শখের বশেই  কিছু ভিডিও ফিল্ম করেন । নিউ ইয়র্কে এসে বিখ্যাত  নাট্য ব্যক্তিত্ব আল-মনসুর সহ বেশ কিছু  টিভিতে বিঙাপন করেছেন ।  নিউইয়র্কে আসবার পর কয়েকটি টিভি নাটকের আমন্ত্রণ পেয়েও  শ্রদ্ধা ভরে সেগুলো প্রত্যাখ্যান করছেন  কারন মঞ্চনাটক ছাড়া অন্যকিছু তাঁকে সেভাবে টানে না। মঞ্চে চ্যালেঞ্জ নিয়ে সরাসরি অডিয়েন্সের সাথে কাজ করার যে আনন্দ তা অন্য কিছুতে আছে বলে তিনি মনে করেন না
জানতে ছেয়েছিলাম এদেশে মঞ্চনাটকের সম্ভাবনার কথা ।তিনি বলেন , এই  শহরে কয়েকটি ডিস্ট্রিক্ট থিয়েটার   আছে তাই এখানে মঞ্চনাটকের অনেক  সম্ভাবনা  রয়েছে । এই শহরে অনেক নাট্যকর্মী আছেন ।তবে সমস্যা হল নাট্যকর্মীদের ইচ্ছে এবং কমিটমেন্ট যথেষ্ট অভাব রয়েছে। নিউইয়র্কের নাট্যকর্মীরা দীর্ঘদিন থেকে নাটক করছেন এবং তারাই অন্তত কয়েকশ দর্শক তারা তৈরি করেছেন। নাট্যকর্মীর জন্য এটি একটি বিশাল পাওনা। তবে সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আরো নতুন নতুন নাট্যকর্মী তৈরি করা এবং দর্শক বাড়ানো সেই গুরুত্বপূর্ণ কাজটা করা হয়ে ওঠেনি। বিশেষ করে নতুন প্রজন্মকে নাটক এর সাথে যুক্ত করার খুব একটা চেষ্টা আমরা এখনো করতে পারছি না । তবে কিছু নাটকে নতুন প্রজন্মের কিছু ছেলেমেয়েদেরকে যুক্ত করেছেন যার বেশিরভাগই আমন্ত্রিত। তিনি মনে করেন  দলীয় সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে নিউইয়র্কের সকল নাট্যকর্মীদের পরিকল্পিত এবং সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।  তাহলে অবশ্যই সকল সম্ভাবনার শহরে  বাংলা মঞ্চ নাটক কে  ভালো একটা জায়গায় দাঁড় করাতে সক্ষম ।
তিনি আরও জানান , বাংলা নাটক এবং বাঙালি সংস্কৃতিকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে নাট্যকর্মী এবং সংস্কৃতি কর্মীদের ভূমিকা যেমন প্রয়োজন তেমনি বিশেষ প্রয়োজন মিডিয়ার ভূমিকা। দেশীয় শিল্প সংস্কৃতি এগিয়ে নিতে পৃথিবীর সকল দেশের সকল কমিউনিটিতে মিডিয়া একটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। কিন্তু নিউইয়র্ক এর মিডিয়ার দিকে তাকালে আমরা দেখি শুধুমাত্র প্রিন্ট মিডিয়ার কেউ কেউ কিছুটা আগ্রহী ভূমিকা রাখছেন। টিভি মিডিয়ার ভূমিকা নেই । এখানে স্পট আছে, প্লট আছেইন্সট্রুমেন্ট আছে,টেকনোলজি আছে এবং সর্বোপরি অভিনেতা-অভিনেত্রী আছেন। নেই শুধু উদ্যোগ। নতুন প্রজন্ম শব্দটির সাথে আমরা সবাই কমবেশি পরিচিত আছি। বক্তৃতা-বিবৃতিতে লেখনীতে আমরা অহরহ এই শব্দের সাথে পরিচিত। কিন্তু তাদের কাজের ক্ষেত্র তৈরী করার কথা আমরা চিন্তা করছি না । আর কাজের ক্ষেত্র তৈরী না করলে তারা কেনইবা নতুনরা আগ্রহী হবে । সম্ভাবনার শহরে সবকিছুই সম্ভব শুধু প্রয়োজন সমন্বিত অথবা ব্যক্তিগত উদ্যোগ। আর উদ্যোগ থাকলেই  কেবল সরকারি উদ্যোগে বা বেসরকারি উদ্যোগে একটি ভবন তৈরি করা সম্ভব  যেখানে অবাধে সংস্কৃতি কর্মীরা নিয়মিত তাদের সাংস্কৃতিক চর্চা করতে পারেন।

সীতেশ’ দা ‘সুনীল’ হতে পারতেন

ডাঃ বিনেন্দু ভৌমিক

সীতেশ’দা ‘সুনীল’ হতে পারতেন। তাঁর সেই এলেম ছিল।

‘সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়’ একবার একটা কবিতা উৎসবে আমেরিকা যান। সেখানে তখনকার দাপিয়ে বেড়ানো কবি, আমাদের ‘ SEPTEMBER ON JESSORE ROAD’-এর সেই বিখ্যাত কবি— ‘এলেন গিন্সবার্গ’-এর সাথে দেখা হয় তাঁর, ভীষণ সখ্যও হয়। মাসখানেক ছিলেন। ‘গিন্সবার্গ’ একসময় তাঁকে ওখানে থেকে যেতে বলেন। পুরো ব্যবস্থা তিনি নিজে করবেন বলেও জানান। কিন্তু ‘সুনীল’ সেই স্বর্গরাজ্য ছেড়ে কলকাতায় চলে আসেন। স্বর্গ থেকে মর্ত্যে নয়, একেবারে পাতালে। পাতাল বলছি এজন্য যে, এসে তাঁকে পড়তে হয়েছিল দারুণ অর্থকষ্টে। টিউশনি করে চালাতে হয়েছে সংসার। এরকমটি যে হবে, তিনি তা জানতেন; আর জেনেই কিন্তু ফিরে আসেন। কারণ লেখালেখি করতে হলে, সাহিত্যিক হতে গেলে যে, নিজ মাতৃভূমির চেয়ে বড় কোনো স্থান আর হতে পারেনা। আর শেষমেশ ভাগ্যও তাকে খালি হাতে ফেরায় নি। তাঁর উপন্যাস নিয়ে সত্যজিৎ ছবি করেছেন। তিনি সত্যজিতের হয়েছেন, সত্যজিৎ হয়েছেন তাঁর। ব্রততী বন্দ্যোপাধ্যায় আবৃত্তিকার হয়েছেন। এখানেও দুজন দুজনের পরিপূরক হয়েছেন। এসব স্বীকৃতি দেশের গণ্ডি পেরিয়ে ছড়িয়ে গিয়েছে দেশে, দেশান্তরে।

সীতেশ’দাও পারতেন। বাংলা নাটকে তিনি যে ব্যুৎপত্তি অর্জন করেছিলেন, তা শুধু ধরে রাখলেই বলার মতো একটা অবস্থানে তাঁর অধিষ্ঠান থাকতো, তা আমি হলফ করে বলে দিতে পারি।

কিন্তু জীবন ও জীবিকার কঠিন করালগ্রাস তাঁকে রাহু ও কেতুর মতো গলাধঃকরণ করে ফেলেছিল। তাঁকে সুদূর আমেরিকায় পাড়ি জমাতে হয়েছিল বাঁচার তাগিদেই।

তবে আশার কথা, সেখানেও তিনি গড়ে তোলেছেন এক সুন্দর নাট্য পরিমণ্ডল। বিগত বছরগুলোতে প্রায় ২৫ টি নাটক মঞ্চায়িত হয়েছে নিউইয়র্কে।

এই গুণী মানুষটি দেশে এসেছেন। আমি তাঁর অপরিমেয় স্নেহধন্য। আজ এসেছিলেন তাঁর সময়কার অনবদ্য খেলোয়াড় নিরবেন্দু নির্ধূত ‘কে নিয়ে।

কিছুটা সময় আমরা কাটালাম আলাপ ও আলোচনার বিমূঢ় আবর্তে, সূচনা আর অনুশোচনার দ্বিবিধ ভাবনায়।

আর, বহুদিন পর মনের ভেতর বাজতেই থাকলো রবিঠাকুরের সেই চিরচেনা গানটি—

‘আয় আরেকটিবার আয়রে সখা,
প্রাণের মাঝে আয়-
মোরা সুখের দুখের কথা কবো
প্রাণ জুড়াবে তায়…।